স্পেসক্রাফট এতো গতি পায় কিভাবে? Planetary Slingshot Explain




উপর থেকে কোন বস্তু ফেলে দিলে কোন বাধা না পেলে বস্তুটি গ্রাভিটির কারনে মাটিতে পরে যাবে। উপর থেকে কোন বস্তু নিচে ফেলা যতটা সহজ ঠিক তার বিপরিতে কোন বস্তুকে উপরে তোলা অনেক কঠিন। কারন বস্তুটি গ্রাভিটির বিপরিতে কাজ করে। গবেষনার জন্য স্যাটেলাইট, স্পেস ক্রাফ্ট, নভোচারীদের মহাকাশে পাঠাতে রকেট ব্যবহার করা হয়। তবে দূরের কোন গ্রহ বা মহাকাশ পর্যবেক্ষনের কোন স্পেসক্রাফ্ট পাঠাতে হলে উচ্চ গতির প্রয়োজন হয়। যা রকেটের মাধ্যমে পাওয়া যায় না। আর সে সময় সামনে আসে Gravity Assist বা Planetary Slingshot।



দূরবর্তী যেসব স্পেস মিশন পরিচালনা করা হয় সেই মিশনের জন্য Gravity Assist বা Planetary Slingshot খুব জরুরী। Gravity Assist  এর ব্যবহারের ফলে প্রধানত দুই ধরনের সুবিধা পাওয়া যায়। নাম্বার এক হলো একটি মহাকশযানকে সর্বোচ্চ গতিতে স্পেসের দিকে ছুড়ে দেয়া, নাম্বার দুই জ্বালানি খরচ কমিয়ে স্পেস মিশনের ব্যয় কনিয়ে আনা। স্পেস মিশন অনেক ব্যয়বহূল। আর তাই মিশনের খরচ কমিয়ে আনা ও মিশনের সময়কাল কমিয়ে আনতে Planetary Slingshot এর বিকল্প হতে পারে না।



ভারতের চন্দ্রযান-৩ অভিযানে ব্যবহৃত চন্দ্রযানকে পৃথিবীর মোট ৫টি Gravity Assist এর মাধ্যমে চাঁদে যাওয়ার জন্য উপযুক্ত গতি অর্জন করে। ভারতের চন্দ্র অভিযানের মোট ৪০ দিনের মধ্যে ১৭ দিন পৃথিবীকে প্রদক্ষিন করে ৫ বার Gravity Assist করে চাঁদের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে। ২০২৩ সালের ২৩-শে আগষ্ট বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৬:১৫ মিনিটে ভারতের লুনার ল্যান্ডার চাঁদের পৃষ্ঠে সফলভাবে অবতরন করে।



আরও পড়ুনঃ চন্দ্রযান-৩ কিভাবে চাঁদে পৌছলো? Chandrayaan Program



১৯৭৭ সালে Voyager-1Voyager-2 লঞ্চ করা হয়। যেহেতু এটা মহাকাশের গ্রান্ট ট্যুর তাই ভয়েজারকে যতটা সম্ভব উচ্চ গতি দিয়ে মহাশূন্যে পাঠাতে হবে। ১৯৬৪ সালে গেরি আর্নোল্ড ফ্লেড্রো ক্যলকোলেশনের মাধ্যমে দেখতে পান ১৯৭৭ সালে শেষের দিকে সৌরমন্ডলের ৪টি গ্যাস জায়েন্ট জুপিটার, সেটার্ন, ইউরেনাস এবং নেপচুন এই চারটি গ্র সূর্য্যের এক পাশে আসবে। তখন থেকেই  Voyager-1 ও Voyager-2 এর গ্র্যান্ড ট্যুরের পরিকল্পনা করা হয়।  Voyager-1 ও Voyager-2 এই চারটি গ্রহের গ্রাভিটি ব্যবহার করে উচ্চ গতি নিয়ে মহকাশের উদ্দেশ্যে যাত্রা শূরু করে। Voyager-1 কে Jupiter ও Saturn এর Gravity Assist ব্যবহার করে মহাশূন্যে পাঠানো হয়। বর্তমানে Voyager-1 পৃথিবী থেকে প্রতি সেকেন্ডে ১৭ কিলোমিটার দূরে সরে যাচ্ছে। Voyager-2 জুপিটার, সেটার্ন, ইউরেনাস এবং নেপচুন এর Gravity ব্যবহারের মাধ্যমে মহাশূন্যে পাঠানো হয়।



সকল গ্রহ বা উপগ্রহ মিশনে যেসব স্পেস ক্রাফট পাঠনো হয়েছে সকল স্পেস ক্রাস্টকেই এভাবে কোন কোন গ্রহের মাধ্যমে Gravity Assist এর মাধ্যমে গই বাড়িয়ে সেই গ্রহে পাঠানো হয়। কারন মহাকাশে কোন বস্তুকে যে গতিতে পাঠানো যাবে সেই গতিতে সুষমভাবে চলতে থাকবে। তবে Gravity Assist ব্যবহার যেমন স্পেস ক্রাফটের গতি বাড়িয়ে নেয়া যায় ঠিক তেমনি কমিয়েও নেয়া যায়। এই ক্ষেত্রে স্পেসক্রাফটকে গ্রহের গতির বিপরিত দিক থেকে আসত হবে তাহলেই স্পেস ক্রাফটের গতি কমে যাবে।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন